৫৭ জন বাংলাদেশিকে লম্বা সময়ের জন্য কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আদালত। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
কোটা সংস্কারের পক্ষেই রায় দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। তবে আন্দোলনের মাত্রা এখনও কমেনি। এরই মধ্যে প্রতিবাদের আঁচ ছড়াচ্ছে বাংলাদেশের বাইরেও। একাধিক দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশ করেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে নেমে যাওয়া প্রবাসীরা লম্বা সময়ের জন্য জেলে গিয়েছেন ৫৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশি।
ওই ৫৭ জনের মধ্যে তিন জন বাংলাদেশীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস্তায় গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। এইজন্য ৫৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং এক জনকে ১১ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত সংবাদ সংস্থাকে উদ্ধৃত করে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের তরফের আইনজীবীরা অবশ্য আদালতে যুক্তি দেখান, যে তাঁদের কারও কোনও অপরাধমূলক উদ্দেশ্য ছিল না। পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তার পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণও নেই বলে দাবি করেন অভিযুক্তদের আইনজীবী। কিন্তু সেই যুক্তি টিকে নিয়ে আদালতে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের এমন কড়া সাজার নির্দেশের নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোনও রকম প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে ও জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুন মাস থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। জুলাইয়ে সেই বিক্ষোভের আগুন আরও বেশি জ্বলে ওঠে। পরিস্থিতি সামলাতে বাংলাদেশে সেনা নামানো হয়। জারি হয় কার্ফু। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষেই মত দিয়েছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়ায় ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতেই। বাকি ৭ শতাংশ থাকবে কোটা। গত কয়েক দিনের আন্দোলনে বাংলাদেশে অন্তত ১৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে জানা গেছে। শুধু মাত্র ঢাকা শহর থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৫০০ বেশি মানুষকে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েক জন বিএনপি নেতাও রয়েছেন।